কারও বাড়িতে চলছে উইন্ডো এসি, কেউ আবার ব্যবহার কড়ছে স্প্লিট এসি। তবে যে ধরনের এসি আপনার বাড়িতে থাকুন না কেন, সঠিকভাবে এসি চালানোর কয়েকটা নিয়ম মানা জরুরি। সেই নিয়মগুলো না জেনে যদি আমরা ভুল নিয়মে এসি চালাই, তাহলে গুনতে হতে পারে বড়ো জরিমানা। এসি যদি ঠিকভাবে ম্যানেজ এবং অপারেট করতে না পারেন, তাহলে ইলেকট্রিক বিল বেশি আসতে পারে। সেই সঙ্গেই আবার অচিরেই আপনার এয়ার কন্ডিশনার তার কার্যক্ষমতা হারাতে পারে। একসময় দেখা যাবে এসি আপনার ঘর ঠিক করে ঠান্ডাও করতে পারবে না। এদিকে এত দাম দিয়েও একটা এসি কেনার পরে সেটি আপনার ঘর কেন ঠান্ডা করতে পারছে না, তার কারণও খুঁজতে ব্যর্থ হন আপনি। তৎক্ষণাৎ ডেকে বসেন একটা একজন মেকানিককে। তাই সচরাচর এসি চালাতে গিয়ে আমরা যে ভুলগুলো করে থাকি, সেগুলো জেনে রাখা আপনার জন্য খুবই জরুরি। তাহলে চলুন, এসি সংক্রান্ত এমনই কিছু ভুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

১) সঠিক সাইজের এসি না কেনা

এসি কেনার আগে আপনার বুঝা উচিত, কোন সাইজের এসি আপনার ঘর এবং প্রয়োজনের সাথে খাপ খাবে। ঘরের সাইজ়ের তুলনায় যদি একটা ছোট এসি কেনা হয়, তাহলে তা ঘর ঠান্ডা করতে অতিরিক্ত সময় নিয়ে নেয়। এর ফলে এয়ার কন্ডিশনার দ্রুত খারাপ হতে পারে এবং ইলেকট্রিক বিলও আসতে পারে খুব বেশি। আবার এর উল্টোটাও যদি হয়, তাহলেও বিপদ। তাই কত টনের এসি কিনবেন, সেটা আগে ঠিক করুন। আপনার যদি এই বিষয়ে ধারনা না থাকে তাহলে এক্সপার্ট কারও সাথে আলোচনা করে নিন।

২) এসির ফিন ও কয়েল পরিষ্কার না করা

এয়ার কন্ডিশনারের কয়েল এবং ফিন ঘরের ভিতরের তাপ শুষে নিয়ে সেই তাপ বাইরে ছেড়ে দিতে সাহায্য করে। কিন্তু অতিরিক্ত ধূলা-ময়লা এই প্রক্রিয়াটিতে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই গরমকাল শুরু হতেই আপনার এসির ফিন ও কয়েল পরিষ্কার করাটা খুবই জরুরি।

AC filter cleaning by Sheba.xyz

৩) এয়ার ফিল্টারকে চেক না করা

নতুন এসি কেনা বা পুরনো এসি একটা সিজনের পর ব্যবহারের ছয় মাসের মধ্যেই তার এয়ার ফিল্টারে ব্যাপকভাবে ময়লা জমে যায়। আর এয়ার ফিল্টারে ময়লা জমে যাওয়া মানে সেখান থেকে ভালো করে হাওয়া পাস করতে পারবে না। ভালো করে এয়ার ফিল্টারে হাওয়া পাস না করতে পারলে সেই এসি ঘর ঠান্ডা করতে অনেক বেশি সময় নিয়ে নেয়। যার ফলে ইলেকট্রিক বিলের পিছনেই আপনাকে অনেক টাকা খরচ করতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসির এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করলে তার কার্যক্ষমতা অন্তত ১৫ শতাংশ বেড়ে যায়।

 

৪) থার্মোস্ট্যাট আপডেট না করা

এসি’র থার্মোস্ট্যাট নিয়েও খুব সচেতন হওয়া উচিৎ। বিশেষ করে আজকাল প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাটের চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়েছে। প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট থাকলে সারাদিনে আপনার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে সেই এসি’র তাপমাত্রা সেট করে রাখতে পারেন। এই মুহূর্তে বাজারে একাধিক প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো গুগল নেস্ট-এর একটি। এই ধরনের থার্মোস্ট্যাট আপনার ঘরের পরিবেশটা খুব সহজেই ধরতে পারে। এরকম একটা প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট থাকলে আপনি অ্যাপ থেকেও এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনার এসিতে যদি এমনতর স্মার্ট বা প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট না থাকে, তাহলে এখনই সেটি আপডেট করিয়ে নিন। এর ফলে আপনি অনেক টাকা বাঁচাতে পারবেন এবং ঠান্ডা হাওয়াও পাবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই।

৫) রিপ্লেসমেন্টকে না করা

এয়ার কন্ডিশনার রিপ্লেস করার খরচ অনেক বেশি হলেও, আপনার তা উপেক্ষা করা উচিৎ নয়।আপনার এসি’র বয়স যদি ১০ বছর বা এর বেশী হয় এবং এসিটি যদি প্রায়ই সার্ভিসিং করাতে হয় তাহলে সেই এসি ব্যবহার না করাই ভালো। অনেক পুরাণ এসি বার বার মেরামত করতে অনেক টাকা খরচ হয়। তারপরে আবার তা থেকে বেশি ইলেকট্রিক বিলও আসে। এইসব অহেতুক খরচ আপরনি তখনই বাঁচাতে পারবেন, যখন একটা নতুন এসি কিনবেন। তাই বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, একটা এসি-র বয়স ১০-১২ বছর হয়ে গেলেই সেটিকে বদলে ফেলুন।

৬) চেক-আপ না করা

এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম রেফ্রিজারেন্ট ব্যবহার করে, যা ঘর থেকে তাপ শোষণ করে এবং বাইরে ছড়িয়ে দেয়। এই রেফ্রিজারেন্ট কমপাউন্ড এয়ার কন্ডিশনার অপারেশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি খারাপ হয়ে গেলেই আপনাকে মোটা টাকা খরচ করতে হতে পারে। তাই একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানকে দিয়ে আপনার এয়ার কন্ডিশনার, বিশেষ করে তার রেফ্রিজারেন্টের হেল্থ চেকআপ করিয়ে নিন। এতে করে অহেতুক খরচ করতে হবে না।

AC check up by Sheba.xyz

৭) বাড়িতে কেউ না থাকলেও এসি ব্যবহার করা

অনেকেই এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা শিডিউল করেন। আর এই তাপমাত্রা শিডিউল করতে গিয়েই হয়ে যায় অনেক ভুলচুক। অনেক সময় দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই অথচ এসি চলছে। এর ফলে ইলেকট্রিক বিল আসে অনেক বেশি। এছাড়াও সারাদিন এসি চালানো এসি’র জন্য ভালো না।

৮) দরজা-জানলা বন্ধ করার কথা বেমালুম ভুলে যাওয়া

এসি চালানোর সময় আমরা অনেকেই দরজা-জানলা বন্ধ করতে ভুলে যাই। এসি চালানোর আগে অতি অবশ্যই ঘরের দরজা-জানলা কিছুক্ষণের জন্য খুলে রাখুন, যাতে ঘরের সব গরম হাওয়া বেরিয়ে যেতে পারে। তবে এসি চালু করার সাথে সাথে দরজা জানালা বন্ধ করে দিতে হবে।

এসি ব্যবহারের সময় এই ভুলগুলো আমরা সবাই কম-বেশি করে থাকি। একটু সচেতন থেকে এই ভুলগুলো না করলেই প্রতিবছর অনেক টাকা সাশ্রয় হতে পারে। তবে অনেকের পক্ষেই সময় স্বল্পতার কারণে এসি’র যত্ন নেওয়া জটিল হয়ে দাঁড়ায়। তবে এই জটিলতা সহজ করতে আছে Sheba.xyz! আপনি ঘরে বসে মোবাইল ফোনেই Sheba.xyz-এর অ্যাপে টেকনিশিয়ানের প্রোফাইল দেখে বাছাই করতে পারবেন আপনি যার হাতে এসি’র সার্ভিস চান। তারপর নির্ধারিত দিন তারিখে সময়মত পৌঁছে যাবে অভিজ্ঞ ও দক্ষ টেকনিশিয়ান। কিছুদিন আগেও এসি’র সার্ভিসিং ছিল এক বিশাল ঝামেলার পর্ব, কিন্তু এখন যেহেতু Sheba.xyz আছে তাহলে এসি’র সার্ভিসিং কেন করবেন না? সময়মতো এসি’র সঠিক যত্ন নিন, অহেতুক খরচ থেকে রেহাই পান।

Service app in Bangladesh- Sheba.xyz

Leave a comment