আমরা সকলেই জীবনে কখনো কখনো এমন সময় পার করি যে নিজের যত্নের কথা পুরোপুরি ভুলে যাই। কাজের ব্যস্ততা, বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া, বিল পরিশোধ করা, খাবার তৈরি করা, ঘর সামলানো, অফিস সামলানো এবং অন্যান্য অনেক দায়িত্বের ভীড়ে নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য সময় বের করা অসম্ভব বলে মনে হয়। আপাতদৃষ্টিতে এই ব্যস্ততাকে খুব ইতিবাচক বলে মনে হলেও ভেতরে ভেতরে আপনাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে—এই অতিব্যস্ত জীবনযাত্রা। কারণ নিজের শরীর ও মনের সমান যত্ন না নিলে একদিন এই বাইরে থেকে ফিটফাট চেহারাটা খসে পড়তে দেরি হয় না। তখন তলিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই থাকে না। তাই সময় থাকতেই অন্য সব ব্যস্ততার মাঝে আমাদের উচিত নিজেদের যত্ন নেওয়া। 

এই কাজটা বেশ কঠিন মনে হলেও কিন্তু জীবনের ব্যস্ততম সময়গুলোতেই নিজের সবচেয়ে বেশি যত্নের প্রয়োজন। নিজেকে সতেজ রাখার জন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও একটু সময় বের করে নিজের একটু যত্ন নেওয়া উত্তম। সেটা এতো হাজারো কাজের শেষে ক্লান্ত ভাব দূর করে আপনাকে সজীব করে তুলতে ম্যাজিকের মতো সাহায্য করে। সুতরাং কীভাবে ব্যস্ত জীবনে নিজের যত্ন নিবেন। 

ব্যস্ত জীবনে নিজের যত্ন নিবেন কীভাবে? 

নিজের যত্ন নেওয়া বিষয়টি অবশ্যই ব্যক্তিভেদে আলাদা আলাদা হয় । এটি সামগ্রিকভাবেই ব্যক্তির নিজস্ব পছন্দ ও চাহিদার ওপর নির্ভরশীল। চলুন আজকের সেবা ব্লগে জেনে নেয়ার চেষ্টা করি জীবনের ব্যস্ততম সময়ে নিজের যত্ন নেওয়ার ছোট ছোট ১০ টি টিপস। 

১. সারা দিনের কাজের শেষে কিছুটা সময় সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে যান। নিজের দেহ ও মনকে একটু শিথিল করুন। সাজগোজ ও রূপচর্চা করুন দেখবেন নিজের কাছেই ভালো লাগবে। সেই সাথে পরিমিত শরীরচর্চা ও যোগ ব্যায়াম করুন । সম্ভব হলে সকালের নরম রোদে কিছুটা সময় থাকুন। এটা শরীরের জন্য খুব প্রয়োজন । 

২. যতো বাস্ততাই থাকুক না কেন পর্যাপ্ত সময় ঘুমান। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের কোন বিকল্প নেই। দিনের যেকোনো সময় খোলা হাওয়ায় কিছুটা হাঁটুন এবং শরীরকে সুস্থ, সবল ও প্রাণচঞ্চল রাখতে পরিমিত সুষম খাবার খান।

৩. প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করার অভ্যাস ধরে রাখুন। ব্যস্ততায় ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক তাই আপনাকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য স্মার্টফোনে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। অনেক অ্যাপ আপনাকে হাইড্রেটেড থাকা নিশ্চিত করতে মনে করিয়ে বার্তা পাঠাবে, সেভাবে সময়মতো পানি পান করলে তা আপনার শরীরকে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখবে। সেই সাথে সুষম খাবারের পাশাপাশি শরীরের জন্য দরকারি ভিটামিন ও মিনারেল ও গ্রহণ করুন।

৪. আপনার মেডিকেল রেকর্ডগুলো সংরক্ষণ এবং নজরে রাখার মাধ্যমে সুস্থতার উন্নতি হতে পারে। আপনি স্বাস্থ্য ট্র্যাক করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি অ্যাপ এবং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে পূর্বের অসুস্থতা, অ্যালার্জি, প্রেসক্রিপশন এবং টিকাদানের বিষয়গুলো নজরে রাখতে পারেন। ডিজিটাল বিশ্বে ডিজিটালভাবে স্বাস্থ্য রেকর্ড বজায় রাখা সুস্থতার জন্য একটি সক্রিয় পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। এই ডিজিটাল রিপোজিটরিটি শুধুমাত্র আপনার রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে না বরং সময়মতো প্রয়োজনীয় টিকা প্রদানও নিশ্চিত করবে।

৫. পোশাক পরুন নিজের পছন্দসই ও একই সঙ্গে আরামদায়ক। পোশাকে যেন আপনার ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে। পোশাক যেন করে তোলে আপনাকে আরও  আত্মবিশ্বাসী। অন্যদিকে শরীরের মতো মনেরও বিশ্রামের প্রয়োজন। মাঝেমাঝে মনকেও একটু বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ করে দিন। 

৬. রান্না করার সময় একটু বেশি পরিমাণেই রান্না করুন যেন প্রতিদিন রান্না না করতে হয়। এতে করে নিজের জন্য কিছুটা সময় পাওয়া যাবে। সংসারের সব কাজের দায়িত্ব নিজের একার উপর না নিয়ে কিছু কাজের দায়িত্ব পরিবারের অন্য সবার মধ্যে ভাগ করে দিন। এতে নিজের উপর থেকে কাজের চাপ যেমন কমবে তেমন পরিবারের সবার মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা ও দায়িত্ববোধ বাড়বে। বাসার কঠিন কাজগুলোর জন্য নিতে পারেন এক্সপার্ট সার্ভিস

Tiles cleaning service by Sheba.xyz

 

৭. বন্ধুদের সঙ্গে মাঝে মাঝে সময় কাটান। সশরীরে যেতে না পারলেও ফোনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয়া যেতেই পারে। গৃহস্থালি কাজে প্রয়োজন হলে প্রফেশনাল কারও  সাহায্য নিন— হতে পারে সেটা বাচ্চার দেখাশোনা বা ঘরের অন্য কোন কাজ। তাছাড়া নিজের অপছন্দের বিষয়ে না বলতে শিখুন। যে কাজ আপনার করতে ভালো লাগে না তাতে না বলতে পারলে মানসিক চাপ অনেকটা কমে যায়। জীবনের অতিরিক্ত  গতিময়তাকে একটু কমিয়ে ছোট ছোট আনন্দ গুলো উপভোগ করার চেষ্টা করুন।

Fridge cleaning service Sheba.xyz

 

৮. সারা দিনের কাজের শেষে একটা সুন্দর হট শাওয়ার নিন। যতো দুশ্চিন্তা সব ঝেড়ে ফেলুন। পানির সান্নিধ্য উপভোগ করুন কিছু সময়। শাওয়ার নেয়ার পর নিজেকে একটু স্নিগ্ধ সাজে সাজান।  ঘরে সুবাসিত মোমবাতি জ্বালিয়ে একটা সুন্দর আবহ তৈরি করুন যেন দেহ মন প্রসন্ন হয়ে যায়। শাওয়ার নিতে না পারলে বাথরুমে কয়েক ফোটা ল্যাভেন্ডার বা পেপারমেন্ট অয়েল ব্যবহার করুন। এতে গোসল না করলেও নিজেকে অনেকটা ফ্রেশ মনে হবে।

৯. কাজের সময় ফেসবুক, ফোন, টিভি এসব মনঃসংযোগ নষ্টকারী জিনিস থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।  এতে কাজের গতি অনেক বেড়ে যাবে। কাজের চাপে যখন নাভিশ্বাস অবস্থা তখন একটু থামুন। লম্বা করে শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। শুনতে আশ্চর্য মনে হলেও এ উপায়ে নিজের এনার্জি বাড়িয়ে নেয়া যায় অনেকটা। যখন হতাশা এসে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে আমরা খুব সহজেই ভুলে যাই আমরা সৃষ্টকর্তার কতোটা আশীর্বাদ পুষ্ট। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন আপনার প্রতি তার অশেষ কৃপার জন্য। দেখবেন মনের ভেতর থেকে শক্তি ফিরে পাবেন। 

১০. সারাক্ষণ কাজের মধ্যে ব্যস্ত না রেখে মাঝে মাঝে নিজেকে একটু ছুটি দিন। হতে পারে সেটা সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিন। এই দিনটা নিজের মতো করে কাটান। দেখবেন একঘেয়ে জীবনের বিরক্তি থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন। এই বিশ্রাম নিজেকে পরের দিন গুলোতে নতুন উদ্যমে কাজে লেগে পড়তে সাহায্য করবে। শখের কাজগুলোর জন্য সময় আলাদা করে রাখুন। ব্যস্ত জীবনে এটি আপনার কাছে বিলাসিতা বলে মনে হতে পারে। তবে সামগ্রিক সুস্থতার একটি অত্যাবশ্যক অংশ হলো এমন কিছু করা যা আপনি উপভোগ করেন। শখ নিজেকে প্রকাশ করতে এবং সৃজনশীল হতে সাহায্য করে। এতে দৈনন্দিন জীবনের চাপ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।

অন্যদিকে sheba.xyz পুরুষ মহিলা সবার জন্য কিছু স্পেশাল সেলফ কেয়ার সার্ভিস নিয়ে আসছে। নিজেকে প্রশান্ত করতে সেগুলো চেক করতে পারেন। 

উপসংহার

জীবনের ব্যস্ততায় আমাদের ছুটে চলা। চলতে চলতে আমরা কখনো ক্লান্ত হয়ে যাই, একটু দম নিয়ে আবার চলতে শুরু করি। এই ছোটাছুটির মাঝে আমরা ভুলে যাই যে, ব্যস্ততাই সব নয়। যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, নিজেকে ভালো রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। কারণ আপনার শরীর বা মনে কষ্ট হলে তা শুধু আপনাকেই ভোগ করতে হবে। তাই সবার আগে নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করুন।

Service app in Bangladesh- Sheba.xyz

Leave a comment