স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করার জন্য বাথরুম পরিষ্কার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত কিভাবে বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা যায় তা নিয়ে আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। বাথরুম আমাদের প্রতিদিনই ব্যবহার করতে হয় আর তাই এটি খুব দ্রুত অপরিষ্কার ও জীবাণু সংক্রামক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

প্রতিদিন বাথরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলেও সঠিক উপায়ে অবলম্বন না করার ফলে তা সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হয় না। তাই বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হলে আমাদের অবশ্যই তা সঠিকভাবে পরিষ্কার করা ও জীবাণু মুক্ত করার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের সেবা ব্লগে আমরা বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখবেন কিভাবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

১. প্রতিদিন বাথরুম পরিষ্কার করুন

বাথরুম জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হলে প্রতিদিন ধারাবাহিকভাবে বাথরুম পরিষ্কার করতে হবে। কাউন্টারটপ, সিলিং, সিংক, কল, টয়লেট সিট ইত্যাদির পৃষ্ঠ বা উপরিভাগ প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। একটি ভালো মানের জীবাণুনাশক ক্লিনার অথবা পানির সাথে সাদা ভিনেগারের মিশ্রণ দিয়ে প্রতিদিন বাথরুম পরিষ্কার করতে হবে। সম্ভব হলে প্রতিদিনই যত্ন সহকারে বাথরুমের আনাচে-কানাচে সকল স্থানেই সমানভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে।

২. সঠিক ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করুন

বাথরুমে সঠিক ভেন্টিলেশন বা যথাযথ বাতাস চলাচল আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। বাথরুম জীবানুমুক্ত রাখতে অবশ্যই আর্দ্রতা হ্রাস করতে হবে এবং এই আর্দ্রতা কমানোর জন্য প্রতিবার বাথরুম ব্যবহারের পর নিষ্কাশন পাখা ব্যবহার করতে হবে অথবা জানালা খোলা রাখতে হবে। বাথরুম ব্যবহারের পর আর্দ্র থাকলে বা আর্দ্রতা বৃদ্ধি পেলে বাথরুমে জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়। তাই বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে সঠিক ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. নিয়মিত টয়লেট পরিস্কার করুন

বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টয়লেট অপরিষ্কার থাকলেই জীবাণু সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত বেকিং সোডা ও ভিনেগারের মিশ্রণ ব্যবহার করে টয়লেটের ভেতর ও উপরিভাগ পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও ফ্ল্যাশ, হ্যান্ডেল, শাওয়ার ইত্যাদি জায়গাগুলোও ক্লিনারের মাধ্যমে পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি ভালো মানের টয়লেট ক্লিনারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. জীবাণু মুক্ত করুন

বাথরুম জীবাণুমুক্ত করতে হলে বাথরুমের প্রতিটি আনাচে-কানাচে জীবাণুনাশক ক্লিনার ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। জীবাণুর বিস্তার কমাতে দরজার লক, লাইটের সুইচ, কেবিনেটর হ্যান্ডেল, বেসিন, ঝরনা, টব, শাওয়ার, টয়লেটের ঢাকনা, আয়না ইত্যাদি সকল জিনিসগুলো নিয়মিত একটি ভালো জীবাণুনাশক ক্লিনার ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে হবে। বাথরুম জীবাণুমুক্ত রাখতে হলে সব সময় আর্দ্রতা হ্রাস করে শুষ্ক রাখার চেষ্টা করতে হবে। সম্ভব হলে প্রতিদিনই বাথরুম ও টয়লেট জীবাণু মুক্ত করতে হবে। 

৫. অর্গানাইজ ও ডিক্লাটারিং করুন

বাথরুম সহজে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করার জন্য মাসে অন্তত একবার বাথরুমের সামগ্রীগুলো অর্গানাইজ এবং ডিক্লাটারিং করতে হবে। বাথরুমের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সঠিকভাবে অর্গানাইজ করে রাখতে হবে যাতে করে বাথরুমের সৌন্দর্য বজায় থাকে এবং বাথরুম অপরিষ্কার না দেখায়। আবার একইভাবে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ডিক্লাটারিং করতে হবে অর্থাৎ অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ফেলে দিতে হবে এবং এতে করে বাথরুমে গ্রাইম জমা হবে না ও বাথরুম পরিষ্কার থাকবে।

৬. জীবাণুনাশক ওয়াইপ ব্যবহার করুন

বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হলে প্রতিবার বাথরুম ব্যবহারের পর জীবাণুনাশক ওয়াইপ ব্যবহার করতে পারেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে প্রতিদিন কাউন্টারটপ, কল, টয়লেটে ঢাকনা, শাওয়ার ইত্যাদির পৃষ্ঠ বা উপরিভাগ জীবাণুনাশক ওয়াইপ দ্বারা পরিষ্কার করতে পারেন। প্রতিদিন টাচ আপ এ থাকা বাথরুম ও টয়লেটের সামগ্রীগুলো ব্যবহার করার পর জীবণুনাশক ওয়াইপ ব্যবহার করে পরিষ্কার করে রাখতে পারেন। এতে করে বাথরুম প্রতিদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং জীবাণুর সংক্রমণ হ্রাস পাবে।

৭. ম্যাট ও তোয়ালে ধৌত করুন

 

বাথরুম ও টয়লেট জীবাণুমুক্ত রাখতে এবং ব্যাকটেরিয়া ও মিল্ডিউ এর সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে হলে বাথরুম ব্যবহারের পর নিয়মিত ম্যাট, ঝরনার পর্দা ও তোয়ালে ধুয়ে ফেলতে হবে। ম্যাট ও তোয়ালে ধৌত করার জন্য গরম পানি ও ভালো মানের উপযুক্ত ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে। ম্যাট, তোয়ালে, ঝরনার পর্দা এগুলো দীর্ঘদিন ধরে অপরিষ্কার থাকলে তাতে ব্যাকটেরিয়া ও নানা ধরনের জীবাণুর সংক্রমণ তৈরি হয় এবং এর ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ে। তাই বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হলে অবশ্যই প্রতিদিনের ব্যবহার্য ম্যাট, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহারের পরে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রয়োজনে সপ্তাহে একবার ঝরনার ছাচ, পর্দা, তোয়ালে ইত্যাদি পরিবর্তন করতে হবে বা প্রতিস্থাপন করতে হবে।

৮. ডিপ ক্লিন করুন

বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে সপ্তাহে বা মাসে অন্তত এক থেকে দুইবার ডিপ ক্লিন অর্থাৎ বাথরুম ও টয়লেট গভীরভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ডিপ ক্লিন করার পূর্বে অবশ্যই একটি ধারাবাহিক সেশনের পূর্ব পরিকল্পনা করে নিতে হবে। বাথরুম ও টয়লেট ডিপ ক্লিন করার মধ্যে গ্রাউন্ড পরিষ্কার করা, ড্রেন খুলে ফেলা, ভেন্টিলেটর পরিষ্কার করা, বাথরুমের দেয়াল পরিষ্কার করা, সিলিং এর ঝুল পরিষ্কার করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। আজকাল এ ধরনের কাজের জন্য প্রফেশনাল ক্লিনার ভাড়া করা যায় এবং প্রয়োজন হলে বাথরুম ডিপ ক্লিন করার জন্য এরকম প্রফেশনাল ক্লিনার ভাড়া করতে পারেন। এছাড়াও পানির দাগ, সাবানের ময়লা ইত্যাদি দূর করার জন্য কাচের আয়না বা শাওয়ার এর দরজায় স্কুইজি ব্যবহার করতে পারেন। বাথরুম ও টয়লেটের বিভিন্ন সামগ্রীর পাশাপাশি এর সকল সারফেস গুলোও ডিপ ক্লিন করতে হবে এবং এর মাধ্যমে বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা যাবে।

উপরোক্ত উপায়গুলো অনুসরণ করে আপনারা খুব সহজে বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে পারবেন এবং বাথরুম নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে এর সৌন্দর্য্যও বজায় থাকবে। তাছাড়া আপনার বাসার হোম ক্লিনিং এর জন্য sheba.xyz এর পেশাদার কর্মীদের সহায়তা নিতে পারেন। 

শেষ কথা

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। উপরোক্ত উপায়গুলো অনুসরণ করে নিয়মিত বাথরুম পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখলে তা আপনাকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।

Leave a comment